Opening Hours

Sat - Wed: 11 AM - 10 PM

সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। এই মাসে আমরা মুসলিমরা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জণের লক্ষ্যে পানাহার ও যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখার চেষ্টা করি। ইবাদাতের এই মাসে আমরা সর্বদা সুস্থ থাকার চেষ্টা করি।

তবে বাঙ্গালিদের অনেকে মনে করে থাকে যে, রোজার মাস মানেই হচ্ছে ইফতারে ভরপেট ভাঁজা পোড়া খাওয়া আর ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়টাকে খাবারের উৎসবে পরিণত করা। আর এটা করা না হলে এই মাসের কোন সার্থকতা নেই। আমাদের এই চিন্তাধারা বা গদবাধা ঐতিহ্য থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে যদি আমরা দেখি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) শুধুমাত্র দুটি খেজুর আর পানি দিয়ে ইফতার করতেন। সেহরিতে সামান্য কিছু খানাপিনাহ করতেন।
বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও এর কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে।

এখন আসি অটোফ্যাজি নিয়ে।

২০১৬ সালে জাপানের বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওশুমি চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পান। তার গবেষনার বিষয় ছিল অটোফ্যাজি, যা কোষের অন্তঃক্ষয় বিষয়ক একটি প্রক্রিয়া।এই প্রক্রিয়া টি কোষের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সহজ ভাষায় কোষ তার বর্জ্যপদার্থ এবং অব্যবহৃত ও ক্ষয়প্রাপ্ত প্রোটিন জাতীয় পদার্থকে বিনাশ করে এবং মৃত কোষের অংশকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তুলে।

এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয় সাধারণত দেহ যখন ফাস্টিং বা অনেকক্ষন না খেয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়াটি দেহের জন্য খুবই জরুরী। কারন অটোফ্যাজি না চললে মানুষ খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। মানব দেহের ১৫ টি জীন আছে, যা অটোফ্যাজি নিয়ন্ত্রণ করে। যদি এই জীন গুলোর কোনো একটি অকার্যকর হয়ে পরে, তাহলে প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হয় এবং নানা ধরণের অসুস্থতা শুরু হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলঃ

  • বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার ( যেমনঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার, অভারিয়ান ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার অন্যতম )
  • কোরনস ডিজেস
  • অ্যাজমা
  • সিস্টেমিক লুপাস
  • পারকিনসন্স ডিজেস
  • আলামারিটিভ কোলিটিস ও অন্যান্য।

আর এই কারনেই অটোফ্যাজি নিয়ে এত গবেষণা চলছে। অটোফ্যাজি দেহে স্বাভাবিক ভাবে শুরু করানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের মেডিসিন উদ্ভাবন করা হচ্ছে। কিন্তু অটোফ্যাজি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সময় খাবার গ্রহন থেকে বিরত থাকার পরই বডিতে বা দেহে স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়। আর তাই এখন মানুষ বিভিন্ন ধরনের ফাস্টিং ,ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর দিকে দিন দিন ঝুকছে।

কিন্তু গবেষণা চলছে যে ঠিক কত সময় ১২/১৪/২৪ ঘণ্টা খাবার গ্রহন থেকে বিরত থাকলে ভাল কাজ হবে এবং ঠিক কি পরিমান খাবার পরবর্তীতে গ্রহন করা যাবে তা নিয়ে। এখন পর্যন্ত সকল গবেষণাতেই মুসলিমদের রোজা রাখার সিস্টেমটি এগিয়ে আছে। কারন দীর্ঘ ১ মাস যাবত আমরা একইভাবে রোজা রাখছি এবং একটি নির্দিষ্ট সময় বিরতি দিয়ে খাবার গ্রহন করছি ও বিরত থাকছি।

রোজার সময় আমরা ক্যালরির চাহিদা কমিয়ে খাবার গ্রহন করছি। এই প্রক্রিয়ায় দেহের কোষগুলো অটোফ্যাজি প্রক্রিয়ায় কাজ করে দেহকে আরও সুস্থ এবং স্বাভাবিক কাজের জন্য প্রস্তুত করে তুলছে। আমাদের দেহ বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে কাজ করা শুরু করে।


Leave A Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *