Opening Hours

Sat - Wed: 11 AM - 10 PM

কেয়া অনেক খাবার খায়। সবাই খুব হিংসে করতো। কারণ ও মোটা হয় না। হঠাৎ শুনতে পেলো কেয়ার হার্ট এট্যাক হয়েছে। সবাই অবাক!

জি এটি খুবই কমন বিষয়। কোলেস্টেরেল বৃদ্ধি। চিকন মানুষের কোলেস্টেরল হয় আবার অধিক ওজনের কারণেও হয়। সাইলেন্ট কিলার বলে এই কোলেস্টেরলকে। তাই আজ আমরা কোলেস্টেরল নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন তবে জেনে নেই –

কোলেস্টেরল এক প্রকার চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টরল। এর মধ্যে এইচডিএল উপকারী। আর এলডিএল শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

কোলেস্টেরল হয়েছে কীভাবে বুঝবেন?

  • বুকে ব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • চরম ক্লান্তি
  • নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
  • ঘাড়, চোয়াল, তলপেটে বা পিঠে ব্যথা
  • উচ্চ রক্তচাপ
কারণ

  • বয়স (বয়সের সাথে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়)
  • অ্যালকোহল সেবন
  • ধূমপান
  • ভুল ডায়েট বা খাবারে অসামন্জস্যতা
  • লিঙ্গ (পুরুষদের কোলেস্টেরল বেশি থাকে)
  • জেনেটিক্স
  • শারীরিক ক্রিয়াকলাপের অভাব
  • ওজন বেশি
  • জাতিগততা (এশীয়ান ব্যক্তিদের উচ্চ কোলেস্টেরল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি)
এবার কী খেলে খারাপ কোলেস্টেরল কমে জেনে নেই-

  • টমেটো

    টমেটোকে সুপার ফুড বলা হয়। এর অনেক গুণ রয়েছে। টমেটোতে বিদ্যমান ভিটামিন – এ এবং সি সহ রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লাইকোপিনও থাকে, এই সকল কিছুর মিশ্রণ উচ্চ মাত্রায় এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে থাকে।

  • আপেল

    দিনে একটি আপেল আসলে আপনার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞকে দূরে রাখতে পারে। ঘন ঘন আপেল গ্রহণ করলে কোলেস্টেরল হ্রাস পায়। আপেলের খোসাতে পাওয়া ফেনলিক যৌগ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

  • আখরোট

    নার্সদের স্বাস্থ্য স্টাডি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নিয়মিত আখরোট খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকির হ্রাস এর সাথে যুক্ত। প্রতিদিন এক মুঠো আখরোট কার্ডিওভাসকুলার রোগের সম্ভাবনা ২০% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে!

  • চিয়া বীজ বা ফ্ল্যাক্স সীড

    ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস ফ্ল্যাক্স সীড। ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং লিগনীন এ  পূর্ণ যা পুষ্টি-পর্যালোচনায় প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকিকে হ্রাস করে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সুপারিশ করে ফ্ল্যাক্স সীডে ফাইটোস্টেরল থাকে যা দেহে এলডিএল কোলেস্টেরল হ্রাস করতে সহায়তা করে। অতএব এমন সুপার ফুডকে একদম এড়িয়ে যাবেন না।

  • বেগুন

    শুনতে অবাক লাগলেও ঠিকই ধরেছেন। বেগুণ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। জানেন তো? স্ট্রেস কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। ২০১৭ এর পর্যালোচনা নিবন্ধে বেগুণ অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করার সাথে যুক্ত হয়েছে যা উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে স্বার্থক।

  • কলা

    কলা কোলেস্টেরল হ্রাস করে এটি আপনার থেকে সরিয়ে, এটি আপনার মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করে ফলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমতে পারেনা। তবে এক্ষেত্রে টকমিষ্টি কলা গ্রহণ করতে হবে।

  • মটরশুটি

    এটি বিশেষত দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ। এরা শরীর হজমে কিছুটা সময় নেয়, এর অর্থ আপনি খাওয়ার পরে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা বোধ করবেন। এই কথাগুলো এইজন্য আসলো অতিরিক্ত ওজন কিন্তু উচ্চ কোলেস্টেরেলের কারণ। ওজন হ্রাস ও কোলেস্টেরল কমাতে চাইলে মটরশুটি হতে পারে উপযুক্ত একটি খাবার।

  • সামুদ্রিক খাবার

    সপ্তাহে দুই বা তিনবার সামুদ্রির মাছ খেলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমে আসে।কারণ এতে রয়েছে এলডিএল-হ্রাস এর উপকরণ ওমেগা -৩। ওমেগা – ৩ রক্তে ​​প্রবাহিতো ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইড হ্রাস করে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনে। সামুদ্রিক মাছ বলতে স্যালমন, টুনাই যে এমন না। আমাদের দেশের ইলিশ মাছও কিন্তু সামুদ্রিক।

  • লবণকে সীমাবদ্ধ করে আনা

    আপনার সোডিয়াম (লবণ) এর পরিমান প্রতিদিন ২৩০০ মিলিগ্রাম (প্রায় ১ চা চামচ) এর ও কম পরিমাণে সীমাবদ্ধ করে আনুন।

  • প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি

    ফলমূল এবং শাকসব্জী সমৃদ্ধ একটি ডায়েট আপনার শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল-হ্রাস করে। ফলমূল ও শাকসবজীতে বিদ্যমান স্ট্যানলস বা স্টেরল নামে পরিচিত এই যৌগগুলি দ্রবণীয় ফাইবারের মতো কাজ করে যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

কিছু নিয়ম না মানলেই নয়

  • ব্যায়ামকে একটি অভ্যাসে পরিণত করুন
    এটি আপনার “খারাপ” (এলডিএল) কোলেস্টেরলকে হ্রাস করে এবং আপনার “ভাল” (এইচডিএল) কোলেস্টেরলকে বৃদ্ধি করে। এটি আপনার রক্তচাপের জন্যও ভাল এবং আপনার হৃদয়কে শক্তিশালী করে। প্রতিদিন ৩৫-৪০ মিনিট হাঁটুন। না হয় ১৫ মিনিট জগিং করুন।
  • একটি স্বাস্থ্যকর ওজন
    আপনার যদি ওজন বেশি হয় তবে কোলেস্টেরল ও বেশি থাকবে। তবে কমে যাওয়ার ফলে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক পথে ফিরে আসবে। এই সঠিক পথের সর্বোত্তম উপায় হ’ল ক্র্যাশ ডায়েটে না গিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সঠিক ডায়েট করা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের শরণাপন্ন হতে হবে।
  • কৃত্রিম ট্রান্স ফ্যাট এড়িয়ে চলুন
    বেকড পণ্য, স্ন্যাক খাবার, পিজ্জা, মার্জারিন, কফি ক্রিমার, যেমন বিস্কুট ইত্যাদি বাদ দিতে হবে।এইগুলোর ট্র্যান্সফ্যাট খুবই ক্ষতিকর।
  • ফাইবার জাতীয় খাবার খাবেন।
  • আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বা ভালো ফ্যাট জাতীয় খাবার খাবেন।
  • ধূমপান আ্যলকোহল বর্জন করতে হবে।

সবশেষে একজন ডায়েটিশিয়ান হতে পারে আপনার বন্ধু। তাই সুস্থ থাকতে নিজের সঠিক ডায়েট চার্টটি স্নংগ্রহ করে নিন।

আজকের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা কেমন লাগলো অবশ্যই শেয়ার কমেন্ট করে জানাবেন।পরবর্তীতে নিয়ে আসবো নতুন কোনো জরুরী খবর নিয়ে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন।


Leave A Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *